শক্তি ফাউন্ডেশন নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি ২০২৪-২০২৫: শক্তি ফাউন্ডেশনে ২০২৫ সালে ৫১৫টি শূন্য পদে বিশাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছে। টেইনি অফিসার, অ্যাকাউন্টেন্ট, মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট সহ বিভিন্ন পদে আবেদনের যোগ্যতা, শেষ তারিখ ও বিস্তারিত তথ্য জানুন।
শক্তি ফাউন্ডেশন ফর ডিসএ্যাডভান্টেজড উইমেন, একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা, ২০২৫ সালের জন্য বিশাল নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এই বিজ্ঞপ্তিতে বিভিন্ন পদে মোট ৫১৫ জন যোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হবে। আগ্রহী প্রার্থীদের অনলাইনে/ডাকযোগে/সরাসরি সাক্ষাৎকারে আবেদন করতে হবে। এই নিবন্ধে, আমরা নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটির বিস্তারিত তথ্য, যেমন – আবেদনের যোগ্যতা, প্রক্রিয়া, শেষ তারিখ এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করব।
এক নজরে নিয়োগ:
- প্রতিষ্ঠানের নাম: শক্তি ফাউন্ডেশন ফর ডিসএ্যাডভান্টেজড উইমেন
- মোট পদ: ৫১৫
- পদের সংখ্যা: ৪টি ক্যাটাগরি
- চাকরির ধরন: বেসরকারি
- বয়সসীমা: ১৮-৫০ বছর
- শিক্ষাগত যোগ্যতা: এসএসসি/এইচএসসি/স্নাতক পাশ
- আবেদন প্রক্রিয়া: অনলাইন/ডাকযোগে/সরাসরি সাক্ষাৎকার
- আবেদনের শেষ তারিখ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
- অফিসিয়াল ওয়েবসাইট: www.shakti.org.bd
- বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ: ২০ ডিসেম্বর ২০২৪
- বিজ্ঞপ্তি সূত্র: বাংলাদেশ প্রতিদিন
শক্তি ফাউন্ডেশন সম্পর্কে:
“শক্তি ফাউন্ডেশন ফর ডিসএ্যাডভান্টেজড উইমেন” ১৯৯২ সাল থেকে সুবিধাবঞ্চিত মহিলাদের দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করে আসছে।
পদের বিস্তারিত তথ্য:
পদের নাম | পদের সংখ্যা | শিক্ষাগত যোগ্যতা | অন্যান্য যোগ্যতা |
---|---|---|---|
টেইনি অফিসার | ৪০০ | স্নাতক/সমমান। অভিজ্ঞ প্রার্থীদের অগ্রাধিকার। | মাইক্রোফাইন্যান্স প্রোগ্রামে কাজের আগ্রহ থাকতে হবে। |
অ্যাকাউন্টেন্ট | ৮০ | স্নাতক/সমমান (হিসাববিজ্ঞানে অগ্রাধিকার)। | হিসাবরক্ষক হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা থাকলে অগ্রাধিকার। |
মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট/প্যারামেডিক | ৩০ | সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ডিপ্লোমা/সমমান। | হেলথ প্রোগ্রামে কাজের আগ্রহ থাকতে হবে। |
মালি | ৫ | অষ্টম শ্রেণী/সমমান। | বাগান পরিচর্যায় অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। |
আবেদনের এলাকা:
ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, বরিশাল, রংপুর, রাজশাহী, সিলেট এবং ময়মনসিংহ বিভাগের জেলাসমূহ।
আবেদন প্রক্রিয়া:
আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীদের পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্ত (CV/Resume), সদ্য তোলা ২ কপি রঙিন ছবি, সকল শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রার্থীদের ক্ষেত্রে আবেদনপত্রে চাকরির যোগদান ও শেষ কর্মদিবসের তথ্য এবং অভিজ্ঞতার সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি এবং রেফারেন্স হিসেবে আত্মীয় নন এমন ২ জন ব্যক্তির নাম, পেশা, ঠিকানা ও মোবাইল নম্বরসহ আবেদনপত্র নিম্নলিখিত ঠিকানায় ৩১শে জানুয়ারি, ২০২৫ তারিখের মধ্যে পাঠাতে হবে:
সিনিয়র ডিরেক্টর, এইচ আর ডিপার্টমেন্ট, শক্তি ফাউন্ডেশন ফর ডিসএ্যাডভান্টেজড উইমেন, বাড়ি নম্বর#৪, রোড নম্বর#১ (মেইন রোড), ব্লক#এ, সেকশন-১১, মিরপুর, পল্লবী, ঢাকা-১২১৬।
গুরুত্বপূর্ণ তারিখ:
- আবেদনের শুরু সময় : আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
- আবেদনের শেষ তারিখ: ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
শক্তি ফাউন্ডেশন: প্রান্তিক নারীদের ক্ষমতায়নের আলোকবর্তিকা
বাংলাদেশে ক্ষুদ্রঋণ ও উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের ক্ষেত্রে শক্তি ফাউন্ডেশন একটি সুপরিচিত নাম। বিশেষ করে, প্রান্তিক নারীদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে এই প্রতিষ্ঠানটির ভূমিকা অপরিসীম। শক্তি ফাউন্ডেশন শুধু ঋণ বিতরণ করেই থেমে থাকে না, বরং নারীদের দক্ষতা উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং দুর্যোগ মোকাবিলায়ও কাজ করে যাচ্ছে। চলুন, শক্তি ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম ও প্রভাব সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
শক্তি ফাউন্ডেশনের সূচনা ও লক্ষ্য
১৯৯২ সালে হুমায়রা ইসলাম ও অন্যান্য কয়েকজন উদ্যমী ব্যক্তির হাত ধরে শক্তি ফাউন্ডেশনের যাত্রা শুরু হয়। এর মূল লক্ষ্য ছিল দরিদ্র নারীদের স্বাবলম্বী করে তোলা এবং তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা। শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটি নারীদের অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের ওপর জোর দিয়ে আসছে।
- প্রধান লক্ষ্য:
- দরিদ্র নারীদের অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষমতায়ন।
- ক্ষুদ্রঋণের মাধ্যমে নারীদের স্বনির্ভর করে তোলা।
- স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও পরিবেশের উন্নয়নে কাজ করা।
- দুর্যোগ ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায় সহায়তা করা।
ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম: নারীর ক্ষমতায়নের মূল হাতিয়ার
শক্তি ফাউন্ডেশনের অন্যতম প্রধান কার্যক্রম হলো ক্ষুদ্রঋণ বিতরণ। এই ঋণের মাধ্যমে নারীরা ছোট ব্যবসা শুরু করতে পারেন, যা তাদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এনে দেয়।
- ঋণের ধরন:
- সাধারণ ক্ষুদ্রঋণ।
- কৃষি ঋণ।
- শিক্ষা ঋণ।
- স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন ঋণ।
- ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তা (এসএমই) ঋণ।
এই ঋণগুলো নারীদের নিজেদের পায়ে দাঁড়াতে এবং পরিবারের আর্থিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাহায্য করে।
স্বাস্থ্য ও শিক্ষা: সামগ্রিক উন্নয়নের ভিত্তি
শক্তি ফাউন্ডেশন শুধু অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেও কাজ করে।
- স্বাস্থ্য কার্যক্রম:
- স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি।
- মাতৃ ও শিশু স্বাস্থ্যসেবা।
- স্যানিটেশন ও বিশুদ্ধ পানির ব্যবস্থা।
- স্বাস্থ্য ক্যাম্প পরিচালনা।
- শিক্ষা কার্যক্রম:
- উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা কেন্দ্র পরিচালনা।
- বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ প্রদান।
- শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ।
- কিশোরীদের জন্য বিশেষ শিক্ষা কর্মসূচি।
এই কার্যক্রমগুলো নারীদের এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সাহায্য করে।
দুর্যোগ মোকাবিলা ও পরিবেশ সুরক্ষা
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাংলাদেশ প্রায়ই প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হয়। শক্তি ফাউন্ডেশন দুর্যোগ মোকাবিলা এবং পরিবেশ সুরক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
- দুর্যোগ মোকাবিলা:
- দুর্যোগকালীন ত্রাণ বিতরণ।
- পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা।
- দুর্যোগ প্রস্তুতি ও সচেতনতা বৃদ্ধি।
- পরিবেশ সুরক্ষা:
- বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি।
- পরিবেশবান্ধব কৃষি পদ্ধতির প্রচলন।
- জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সচেতনতা তৈরি।
এই কার্যক্রমগুলো প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে দুর্যোগের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে রক্ষা করে এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় অবদান রাখে।